গর্ভধারনের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ

গর্ভধারনের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ

আর্টিকেলটিতে যা থাকছে -

সকল মেয়েরই থাকে মা হবার তিব্র আকাংখা।সেজন্য গর্ভধারনের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ মেনে চলা উচিত। ইদানিং মা হওয়া খুব সহজ নয়, আবার খুব কঠিন নয়। বিধাতা নারী যখন বানিয়েছেন তেমনি অনেক স্বপ্ন দেখার ইচ্ছা ও সু্যোগ দিয়েছেন। বিজ্ঞানের যুগে  আমরা যেমন অগ্রগতির দিকে অগ্রসর হচ্ছি, তেমনি আমরা কিছু ক্ষতিকর দিকে প্রভাবিত হচ্ছি। তাই মা হওয়া কিছুটা হলেও বাধাঁগ্রস্থ হচ্ছে। 

সত্যি বলতে কি মা হওয়ার পথটি ঠিক মিস্টি ঝাল লবনাক্ত। মা হওয়ার আগের পথটুকু ঝাল লবনাক্ত হলেও ফল যখন পাওয়া যায় তখন কিন্তু মিস্টিই লাগে। যারা মা হয়েছেন তারা জানেন নিশ্চয়ই।। মা হওয়ার জন্য আপনার ইচ্ছা,বিধাতার সম্মতি আর  কিছু পদক্ষেপ তো লাগবেই। গর্ভধারণ এর জন্য কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ মেনে চলা উচিত। গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর অনুসরণেও বাড়তে পারে গর্ভধারণের সম্ভাবনা

 

গর্ভধারনের জন্য কিছু পরামর্শ :

গর্ভধারনের জন্য কিছু পরামর্শ নিচে দেওয়া হল:

  • গর্ভধারণের সময়টি একজন নারীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সর্বপ্রথম আপনার পার্টনার এর সাথে খোলাখুলি আলোচনা করুন। আপনারা দুজনেই রাজি কিনা মা বাবার দায়িত্ব নিতে! এরপর বিবেচনা করে দেখুন আপনি নিজে মানসিক ভাবে প্রস্তুত কিনা। এসব বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি আগে থেকেই সেরে রাখুন। গর্ভাবস্থায় হরমোন পরিবর্তনের  কারণে একজন মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য খুবই খারাপ যেতে পারে। গর্ভধারণ এর জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করুন। স্বামী স্ত্রী  রাজি থাকলে আপনারা অবশ্যই একজন গাইনি ডঃ এর শরনাপন্ন হন।
  • গর্ভধারণের আগে পরামর্শ কেন নেবেন? গর্ভধারনের জন্য পরামর্শ বলতে গর্ভধারণের পরিকল্পনা করার আগে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা পারিবারিক চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চেকাপ করে নিন। আপনার ব্যক্তিগত আর পারিবারিক রোগব্যাধির ইতিহাস, আপনার স্বাস্থ্যগত অবস্থা, কোন ওষুধ খাচ্ছেন কিনা সেসব খতিয়ে দেখবেন চিকিৎসক। জিনগত কোন সমস্যা আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

  • কিছু কিছু ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে যা বদলানোর প্রয়োজন হতে পারে।
  • গর্ভধারণের সঠিক ও কার্যকর উপায় বলতে গেলে নানা রহস্যে ঘেরা। ফলে গর্ভধারণে সক্ষম নারীও অনেক সময় জটিলতায় ভুগতে পারেন। থায়রয়েড,ডায়বেটিস,পিসিওস (pcos)রক্তের সংক্রমণ, হেপাটাইটিস বি,প্রেশার বা অন্য কোন রোগে আক্রান্ত কিনা তা নির্ণয় করে ডঃ এর পরামর্শ অনুযায়ী তারপর চেষ্টা করুন।
  • বাবা মায়ের কারো সিস্টিক ফিব্রোসিস, শিকলড কোষ, থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদির মত রোগ আছে কিনা তা ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
  • pcos(polycystic ovary syndrome) আছে কিনা দেখতে হবে।
  •  Pcos হতে পারে- 1 .বংশগত কারনে   2.ওভারিতে সিস্ট এর জন্য    3.হরমোন এর ভারসাম্যহীনতার জন্য
  • মায়ের শরীরে কোন সংক্রামক রোগ থাকলে তা গর্ভস্থ শিশুর শরীরেও ছড়িয়ে পড়ার জোর সম্ভাবনা আছে। তাই এক্ষেত্রে সচেতনতার সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • রুবেলা ভাইরাস, চিকেন পক্স,ধনুস্টংকার ইত্যাদির প্রতিষেধক নেওয়া আছে চিকিৎসক এর সাথে পরামর্শ করা উচিত।
  • কোন ভ্যাক্সিন নেয়ার পর ১ মাস অপেক্ষা করা উত্তম।
  • জরায়ুমুখে কোন সমস্যা আছে কিনা তা জানার জন্য প্যাপ টেস্ট করে রাখতে পারেন।
  • তলপেটের স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ করুন। গর্ভধারণের পূর্বে আপনার ওজন বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ঠিকঠাক রাখুন।ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অতিরিক্ত ওজন গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদান উভয় ক্ষেত্রেই জটিলতা দেখা দেয়। র্ভধারণের পূর্বে নিরাপদ ওজন বজায় রাখতে আপনার চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ মেনে চলুন। গর্ভধারণের পরিকল্পনা করার সময়ে একটা ফিটনেস প্ল্যান সাজাতে হবে। 
  • গুড টাইমিং সবার হয় না।।কারো একবারের চেষ্টাতে কন্সিভ হয়ে যায় আবার কারো অনেক সময় লাগে
  • ভারি ব্যায়াম বা পেটের ভারি কাজ বাচ্চার জন্যে চেস্টাকালে বিরত রাখুন।
  • ফলিক এসিড বা প্রয়োজনীয় ওষুধ ডঃ এর পরামর্শ অনুযায়ী নিন।
  • গর্ভধারনের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ এর মাঝে সর্বপ্রথম ওভুলেশন বুঝে সহবাস থেকে করুন। অবশ্যই ভাল মুডে সহবাস করুন। সহবাস এর ব্যবধান হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। পুরুষদের শুক্রানু গঠনের জন্য কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। যান্ত্রিকভাবে প্রতিদিন সহবাস করলে তা সম্ভব হয় না।দরকার পড়লে ওভুলেশন কিট পাওয়া যায় তা ব্যবহার করুন। যদি কোন দম্পতি নিয়মিত সহবাস করেও সন্তান ধারণ না করেন,তবে এর জন্য তাদের যৌন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণ খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এটি সম্ভব উপযুক্ত ডাক্তারি পরামর্শ ও চিকিৎসার মাধ্যমে।
  • যাদের নিয়মিত মাসিক হয় তারা অনায়াসে বুঝতে পারবেন কখন আপনার ওভুলেশন হচ্ছে।
  • যেমন যে সময় ওভুলেশন হয় তখন অতিরিক্ত গরম লাগে, তাপমাত্রা বাড়ে শরীরের।সাদা স্রাব যায়, ক্রেভিংস হয় শারীরিক চাহিদার।ওই সময়টা পারফেক্ট সময় ওভুলেশন এর।
  • মাসিকের ১০-২০ দিনের মাঝে গর্ভধারণ করার খুবই উপযুক্ত সময়।  
  • হতাশ হবেন না।মানসিক চাপ গর্ভধারণ এ বাধাঁ দেয়। হতাশ হওয়া যাবেনা। নিজেকে ব্যস্ত রাখুন সৃজনশীল কাজে।
  • র্ভধারণের উপযোগী সময় বিবেচনা করুন। আপনি যদি কোন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকেন তাহলে গর্ভধারণের জন্মনিরোধক পদ্ধতি অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন।

গর্ভধারনের জন্য পরামর্শ বলতে সর্বশেষ নিজেকে সব কিছুর জন্য প্রস্তুত রাখবেন।।আপনার জন্য যা মংগল তাই হবে। আমি আপনি শুধু চেস্টা করে যেতে পারি। অনেক কিছুই মানুষের নিজের হাতে থাকে না এটা মেনে নিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ
গর্ভাবতী মা এর অধিক গরম লাগার কারন ও করনীয়
গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মা এর রোজায় করনীয়
গর্ভধারণে বিলম্বিত? কোন ভুল করছেন না তো?
গর্ভকালীন ডায়বেটিস এ মা এর করণীয়
গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে করনীয়
নবজাতক এর কিছু সাধারন সমস্যা
আবহাওয়া অনুযায়ী শিশুর পোশাক
শিশুর কৃমি থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন?

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

সম্পর্কিতপোস্ট

সম্পর্কিত পোস্ট

মন্তব্য করুন বা প্রশ্ন করুন ?

অনুসরণ করুন

error: Content is protected !!