শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি করবে যেসব খাবার

শিশুর-উচ্চতা-বৃদ্ধি-করবে-যেসব-খাবার

শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি করবে যেসব খাবার তা নিয়ে আজকের আর্টিকেল! বলা হয় উচ্চতা বৃদ্ধি অনেকখানি নির্ভর করে জেনেটিকের ওপর। । উচ্চতা না বাড়ার পেছনে জিনগত বিষয়কে প্রধান কারণ বললেও অপর্যাপ্ত পুষ্টি অন্যতম একটি কারণ। খাদ্যাভ্যাস এ পুষ্টিযুক্ত খাবার না থাকলে শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা বাঁধাগ্রস্ত হয়। সচেতন মা বাবা তাদের সন্তানের উচ্চতা কিংবা বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত থাকেন । উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে পুষ্টিকর খাবার এর সংযোগ রয়েছে। মনে রাখতে হবে, যথোপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা, এবং পরিশ্রম আপনার শিশুকেও লম্বা করে দিতে পারে।

শিশুর উচ্চতা কি বাড়ানো যায়?

একটি শিশুর উচ্চতা বেশিরভাগই তাদের পিতামাতা এবং অন্যান্য নিকটাত্মীয়দের উচ্চতার উপর নির্ভর করে। শিশুদের উচ্চতা তাদের নিজস্ব গতিতে বৃদ্ধি পায় । বয়স বাড়ার সাথে বয়ঃসন্ধির সময় তাদের উচ্চতা বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। তিন থেকে ১২ বছর শিশুদের উচ্চতা বাড়ার আর্দশ সময়। তাই সন্তানের খাওয়াদাওয়ার উপর বাড়তি নজর রাখা জরুরি। উচ্চতা বৃদ্ধির এই বছরগুলিতে শিশুদের জন্য কিছু খাদ্য নির্বাচন করতে হবে। যেহেতু বাচ্চারা অল্প খাবার খায়, তাই বাচ্চার খাবারের মেনু এমন ভাবে নির্বাচন করা জরুরি অল্প খাবার খেলে যাতে তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিটা দরকার হয় সেটা পূরণ হয়ে যায়। শিশুর উচ্চতা বাড়াতে খাবার এর মেনু শিশুর পছন্দের দিকে খেয়াল রেখে নির্ধারন করতে হবে। ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন ডি,আমাইনো এসিড বা সব ধরনের মিনারেল যেন পেতে পারে খাবার থেকে।

 

 

শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি করবে যেসব খাবার

শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় খাবার এর তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ

  • ডিমঃ

    শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি করতে ডিম অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ! এতে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি১২, রাইবোফ্ল্যাভিনের এবং আয়রন। এছাড়া ডিম এর হলুদ অংশে রয়েছে ভিটামিন ডি।
    বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রোটিন কোষের বৃদ্ধি ও শিশুদের কঙ্কাল বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিকাশে সহায়তা করে ।অনেক শিশুর অ্যালার্জি থাকে নির্দিষ্ট খাবারে। যদি কোনো অ্যালার্জি সমস্যা থাকে তবে ডিম খাওয়াবেন না।

  • চর্বিহীন মাংসঃ

    যেসব খাবার খেলে শিশু দ্রুত লম্বা হবে তার মাঝে মাছ এবং চামড়াহীন মুরগি চর্বিহীন মাংসের জন্য আদর্শ উদাহরন। এটি বাচ্চাদের উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে যা প্রোটিন সমৃদ্ধ কিন্তু স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম।

  • বাদাম

    শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি করতে অন্যতম হচ্ছে বাদাম। বাদাম হচ্ছে পুষ্টির পাওয়ার হাউস। এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং প্রোটিন। এগুলো ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। খাদ্যতালিকায় বাদাম যোগ করলে শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি করবে। এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন ই রয়েছে।

  • দই

    শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করবে যে খাবার তার মাঝে দই অন্যতম । দই প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং জিঙ্কের ভালো উৎস। এতে রয়েছে প্রোবায়োটিক। প্রোবায়োটিক অপুষ্ট শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়তা করে। যদি বাচ্চারা দই পছন্দ না করে তবে চিজ খাওয়ানো যেতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি রয়েছে।

  • শাকসবজি

    শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে যেসব খাবার উপকারী তার মাঝে অন্যতম হল শাকসবজি । শিশু যদি সঠিক খাবার না খায়, তবে সে দ্রুত বাড়বে না। তাই খাদ্যতালিকায় রঙ্গিন শাকসবজি যোগ করতে হবে । ভ্যারিয়েশন আনতে বিভিন্ন সবজি ও সবজির স্মুদি আকারে পালং শাক, চাইনিজ বাঁধাকপি, ক্যাল বা ব্রকলি দেয়া যেতে পারে! কেননা শাক সবজিতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে।

  • দুধ

    শিশুর উচ্চতা বাড়াতে প্রাত্যহিক খাদ্যতালিকায় রাখবেন দুধ। দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন, যা হাড়ের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। শিশুদের হাড়ের খনিজকরণের জন্য বাচ্চাদের প্রতিদিন দুধ পান করান উচিত বা এমন খাবার তৈরি করা যা দুধের সমপুষ্টিতে ভরা। যদি আপনার শিশুর ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকে, তাহলে শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নিন।

ওটস,নারকেলের পানি, ছানা, বাদাম ও কিশমিশ খাদ্য তালিকায় যোগ করা উচিত। ওটস এ ভিটামিন বি, ই, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা শিশুদের পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এর প্রোটিন শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

উচ্চতা বৃদ্ধিতে পেরেন্টসদের জন্য কিছু সাধারন টিপসঃ

  1. শিশুর উচ্চতা বাড়াতে এছাড়াও বাচ্চাদের নিয়মিত কিছু শারীরিক চর্চায় নিয়োজিত করুন
  2. পর্যাপ্ত ঘুম এর দিকে খেয়াল রাখুন
  3. সূর্যের আলোতে শিশুদের খেলতে দিতে হবে। সূর্যের আলো এবং ভাল কোলেস্টেরল একসাথে বিক্রিয়া করে ত্বকে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি করে। যা পরবর্তিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম শোষনে সহায়তা করে। এতে করে BMD (Bone Mineral Density) বা হাড়ের গঠন মজবুত করে শিশুকে উচ্চতায় বাড়তে সহায়তা করে।
  4. শিশু বড় হওয়ার সাথে সাথে তাকে সুইমিং, সাইকেলিং ইত্যাদির সাথে অভ্যস্ত করাতে হবে ।  শিশুর মেটাবলিজম বৃদ্ধি হবে এবং শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে
  5.  শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য কোনো সাপ্লিমেন্ট দরকার কিনা তা জানতে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।

 

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

সম্পর্কিতপোস্ট

সম্পর্কিত পোস্ট

মন্তব্য করুন বা প্রশ্ন করুন ?

অনুসরণ করুন

error: Content is protected !!