বাচ্চা হওয়ার পর পিরিয়ড দেরিতে শুরু হওয়ার কারণ ও করণীয়

এই আর্টিকেলে থাকছে
• বাচ্চা হওয়ার পর পিরিয়ড দেরিতে শুরু হওয়া কি স্বাভাবিক?
• কবে শুরু হবে
• কোন হরমোনের জন্য দেরি হয়?
• আবার গর্ভধারণ
• মায়ের কি করণীয়
গর্ভাবস্থা ও সন্তান প্রসব এই দুই সময় মায়ের শরীরে অনেক ধরনের হরমোনের তারতম্য হয়ে থাকে। ফলে বাচ্চা হওয়ার পর অনেক নারীরদের পিরিয়ড বা মাসিক দেরিতে হয়। তাই ঘাবড়ে যান মায়েরা। একে তো নতুন মা হওয়ার চাপ, অন্যদিকে পিরিয়ড না হওয়া মাকে চাপে ফেলে দেয়। আপনি কি ভাবছেন কেন এমনটি হয়, তাহলে নিচের লেখাটি আপনার জন্য।
বাচ্চা হওয়ার পর পিরিয়ড দেরিতে শুরু হওয়া কি স্বাভাবিক?
বাচ্চা যদি শুধু বুকের দুধ খেয়ে থাকে, তবে মায়ের মাসিক বিলম্বিত হতে পারে। এটি খুব স্বাভাবিক। মা যদি বাচ্চাকে বুকের দুধের পাশাপাশি ফিডার বা ফর্মুলা খাওয়ায় তবে মাসিক তাড়াতাড়ি শুরু হয়ে যায়। মা যদি বাচ্চাকের শুধু বুকের দুধ খাওয়ান তবে মা এর পিরিয়ড ৬মাস – ১ বছর ও দেরিতে শুরু হতে পারে।
কোন হরমোনের জন্য দেরি হয়ঃ
প্রো-ল্যাক্টিন একটি হরমোন যা মায়ের শরীরে দুধ উৎপন্ন করে। স্বাভাবিক ভাবে এই হরমোন যদি কোন নারীর শরীরে বেড়ে যায় তার মা হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে বিলম্বিত হয়। বাচ্চা জন্মদানের পর মা যেহেতু শিশুকে দুধ পান করান তাই প্রো-ল্যাক্টিন এর পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে মা মায়ের ওভুলেশন বন্ধ থাকতে পারে। ফলে মায়ের দেহে ডিম্বাণু উৎপন্ন হয়না। আর এ কারণেই বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের পিরিয়ড বা মাসিক দেরীতে শুরু হতে পারে। প্রো- ল্যাক্টিন এর জন্য সাধারণ অবস্থাতেই মা এর গর্ভধারণ বাধাঁগ্রস্থ হয়।
কবে শুরু হতে পারেঃ
বাচ্চা হওয়ার পর পিরিয়ড দেরিতে শুরু হওয়া স্বাভাবিক। কিছু কিছু মায়ের ক্ষেত্রে যতদিন বুকের দুধ খাওয়ায় ততদিনই পিরিয়ড / মাসিক বন্ধ থাকে, কিছু মায়ের অনিয়মিত ভাবে শুরু হয়। অর্থাৎ মাসিক তার মাসিক চক্র মেনে চলে না।।
আবার অনেক নারীর স্বাভাবিক হয়ে যায় ৬ মাসের মধ্যেই। তাই বলা যায় মাসিক শুরু হবার ব্যাপারটি একেক মায়ের সাথে অন্য মায়ের পার্থক্য আছে।

  • মা যদি এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং করান তবে পিরিয়ড দেরিতে শুরু হতে পারে।
  • মা যদি দিন আর রাতে দুইসময়ই বুকের দুধ দিয়ে থাকেন অর্থাৎ বাচ্চা যদি এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং করে থাকে তবে পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে।
  • মা যদি শিশুকে ঘুমের সময় ও দুধ খাওয়ানোর সময় ছাড়াও বুকের কাছে রাখেন অর্থাৎ মা ও শিশুর বন্ডিং যদি ভালো হয় তবে পিরিয়ড শুরু হতে দেরি হতে পারে
  • শিশু যদি প্যাসিফায়ার বা ফিডার ব্যবহার না করে তবে দেখা যায় মায়ের পিরিয়ড শুরু হতে দেরি করে। অনেক সময় দেখা যায় বুকের দুধ খাওয়ানো শেষ হলেও মায়ের পিরিয়ড শুরু হতে দেরি হয়। তবে একবার শুরু হলে সাধারনত আর সমস্যা হয় না। সাধারনত শিশুর সলিড খাবার শুরু করলে তখন বুকের দুধ কম খায় তখন পিরিয়ড শুরু হয়ে যায়।

আবার গর্ভধারণঃ  বাচ্চা হওয়ার পর পিরিয়ড দেরিতে শুরু হওয়া যেমন স্বাভাবিক ঠিক তেমনি অনেক সময় দেখা যায় মা এর পিরিয়ড বা মাসিক শুরুই হয় নি মা আবার গর্ভধারণ করে থাকেন, এটি ও স্বাভাবিক। তাই মা-বাবা
যদি কোন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করেন তবে মা গর্ভধারণ করে ফেলতে পারেন। এই গর্ভধারণ প্রসবের পরে পিরিয়ডের শুরু হওয়ার আগেই হয়ে যেতে পারে। এই সময় টা মায়ের জন্য অনেক বিপদজনক।
মায়ের কি করণীয়ঃ
বাচ্চা হওয়ার পর পিরিয়ড দেরিতে শুরু হওয়া স্বাভাবিক। আবার গর্ভধারণ করা ও স্বাভাবিক। তাই নতুন মা বাবা অবশ্যই কোন নিরাপদ গর্ভনিরোধক পদ্ধতি অবলম্বন করবেন। আপনার চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারেন। স্তন্যদানকারী মায়ের অনেক সময় মা এর দুধ এনগোর্জমেন্ট হতে পারে। সেজন্য ব্যবস্থা নিবেন। মা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকবেন। হেলদি ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করবেন। ৬-৮ সপ্তাহ পার হলে ব্রেদিং এক্সারসাইজ করবেন। মেডিটেশন ও করতে পারেন। শুভ কামনা রইল মায়ের জন্য।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

সম্পর্কিতপোস্ট

সম্পর্কিত পোস্ট

মন্তব্য করুন বা প্রশ্ন করুন ?

অনুসরণ করুন

error: Content is protected !!