গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে করনীয়

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য

গর্ভাবস্থা একজন নারীর জন্য খুব আনন্দের কিন্তু এই নয় মাসের দীর্ঘ যাত্রাতে মা এর অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।। তার মাঝে গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য অন্যতম। যার কারনে মা অনেক কস্ট পেয়ে থাকেন। কিন্তু অনাগত সন্তানের জন্য মা এর কাছে এই কস্ট কিছুই নয়।। তারপরেও মা এর জন্য কিছু ধারনা থাকলে মা এর গর্ভযাত্রা অনেক সহজ হতে পারে।

এই সময়ে মা এর অনেক শারীরিক সমস্যার মাঝে “কোষ্ঠকাঠিন্য” অন্যতম।  আসুন আজ জেনে নেই গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কে। 

কোষ্ঠকাঠিন্য কিঃ একজন মানুষের পরিপাকতন্ত্র এর কাজ যখন স্বাভাবিক ভাবে সম্পন্ন হয় না অর্থাৎ খাবার হজমে সমস্যা হয়ে থাকে এবং মল ত্যাগ ও বায়ু নির্গমন এ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে থাকে তক্ষণ কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য একজন নারীর হওয়া খুব স্বাভাবিক। 

জরায়ু বড় হয়ে বৃহদন্ত্রের উপর চাপ পড়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে।। অনেক সময় গর্ভধারনের প্রধান লক্ষন কিন্তু এই কোষ্ঠকাঠিন্য।।

কখন হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্যঃ সাধারনত গর্ভধারণ এর প্রাথমিক দিকে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে, যা পরোক্ষভাবে ডিমের Fertilization নির্দেশ করতে পারে। গর্ভাবস্থায় পরিপাকতন্ত্র এর উপর প্রোজেস্ট্ররন এর প্রভাব অনেক। প্রোজেস্ট্ররন হরমোন বেড়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাসে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার প্রবনতা বেশি। ধীরে ধীরে জরায়ু বড় হওয়ার সাথে সাথে সমস্যা বাড়তে থাকে। প্রতি চার জনে একজন গর্ভবতী নারীর  কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার কারনঃ
গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার কারনগুলো হলঃ

  • হরমোন জনিত কারনে 
  • আয়রন সাপ্লিমেন্ট এর কারনে
  • খাদ্যাভ্যাস 
  • শারীরিক কার্যক্রম এর ঘাটতি
  • জরায়ু সম্প্রসারণ 
  • পায়খানা আটকে রাখলে
  • হায়পো-থায়রেয়ডোজম থাকলে (Hypothyroidism)
  • স্নায়ুজনিত পার্কিনসন্স ডিজিজ (Parkinson’s Disease) এর জন্য 
  • মানসিক চাপ

নিচে একটু বিশদ আকারে আলোচনা করা হল কোষ্ঠকাঠিন্য এর কারনসমূহ।।
বিস্তারিত জানা থাকলে গর্ভাবস্থায় মা এর কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকটাই সম্ভব।

  • হরমোনজনিতঃ গর্ভাবস্থার অন্যতম লক্ষনগুলোর মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য অন্যতম। গর্ভাবস্থায় মা এর প্রোজেস্ট্ররন ও ইস্ট্রাজোন হরমোন বেড়ে যায়।। কিন্তু প্রোজেস্ট্ররন মা এর শরীরে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। পরিপাকতন্ত্র এর উপর প্রোজেস্ট্ররন এর প্রভাব অনেক। প্রোজেস্ট্ররন পরিপাকতন্ত্র এর মাংসপেশির শিথিলতা বাড়িয়ে দেয়, এতে খাদ্য পরিপাকের কার্যক্রম ধীর গতির করে দেয়। ফলাফল কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হয়।
  •  আয়রন সাপ্লিমেন্ট এর জন্যঃ গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় সপ্তাহে বা তৃতীয় সপ্তাহে রক্ত পরিক্ষা করলে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় মা এর অনেক সময় হিমোগ্লোবিন কমে যায়। যার ফলে মা কে অনেক সময় আয়রনজনিত ওষুধ গ্রহন করতে হয়। কেননা হিমোগ্লোবিন উৎপাদন করে থাকে আয়রন। এই আয়রন জাতীয় ওষুধ মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে। 
  • খাদ্যভ্যাসঃ কম ফাইবারযুক্ত খাবার ও জাংক ফুড বা ফ্যাটি খাবার থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এরকম কিছু খাবার এর তালিকা হল-
  1. প্রসেসড খাবার থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে ( চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, সসেজ, সাদা স্যান্ডউইচ, বার্গার এর বান বা পাউরুটি )
  2. গ্লুটেইন রয়েছে এমন খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে। সবার নয় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্লুটেন সমৃদ্ধ খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে। যব, বার্লি, রাই বা শস্য সমৃদ্ধ খাবার এ গ্লুটেন রয়েছে।  Ref-Medicinenet
  3. রেড মিট বা গরুর মাংস, খাসির মাংস
  4. ফাস্ট ফুড বা জাংক ফুড 
  5. অতি দুগ্ধজাতীয় খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে (আইসক্রিম, কাস্টার্ড,দই, চিজ)। Ref-Verywealth
  6. Persimmons জাতীয় ফল
  7. ক্যাফেইন, চকলেট জাতীয় খাবার
  8. বাঁধাকপি, ফুলকপি ধরণের সবুজ শাক–সবজিগুলিতে র‍্যাফিনোজ সমৃদ্ধ শর্করা থাকে সেগুলি এড়িয়ে চলা উচিত। র‍্যাফিনোজ পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে পেটকে ফাঁপিয়ে তোলে। অনেকের ক্ষেত্রে ব্রকোলি ভাল কাজে আসে। কিন্তু সবার হজম ক্ষমতা এক নয়।
  • শারীরিক কার্যক্রম এর ঘাটতিঃ গর্ভাবস্থায় কেন যেকোন মানুষের যদি শারীরিক কার্যক্রম এর ঘাটতি থাকে তার কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। খাবার হজম হওয়ার জন্য শারীরিক কার্যক্রম বা হালকা পরিসরে ব্যায়াম প্রয়োজন। শারীরিক কার্যক্রম এর ঘাটতি হলে খাবার পাচন হতে সময় নেয় এবং মল/ পায়খানা শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে।
  • জরায়ু সম্প্রসারণঃ গর্ভাবস্থায় মা এর জরায়ু সম্প্রসারণ হয়ে থাকে ফলে বৃহদন্ত্রে চাপ প্রয়োগ হয়। এতে মা এর খাবার পাচনে সময় নিয়ে দেখা যায় কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি হয়। মা এর পায়খানা শক্ত হয়ে যায় বা তল পেটে অস্বস্তি হয়ে থাকে।
  •  পায়খানা আটকে রাখলেঃ অনেক সময় প্রয়োজনে বা অলসতা থেকে পায়খানা আটকে রাখলে
  • Association of Clinical Endocrinologists (AACE) এর গবেষণা থেকে জানা যায় মা এর যদি হায়পো- থায়রয়েডাজিম থাকে তবে মা কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া খুব স্বাভাবিক। মা এর শরীরে থায়রয়েড হরমোন লেভেল কমে গেলে মা এর হজম বা পাচন ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশেষজ্ঞ ডঃ এর পরামর্শ নেয়া উচিত যেন গর্ভাবস্থায় মা কোষ্ঠকাঠিন্য ও থায়রয়েড দুটো থেকেই মুক্তি পান বা নিয়ন্ত্রনে থাকে।  
  • স্নায়ুজনিত পার্কিনসন্স ডিজিজ (Parkinson’s Disease) এর জন্যঃ গর্ভাবস্থায় মা এর যদি স্নায়ুজনিত পার্কিনসন্স ডিজিজ (Parkinson’s Disease) থেকে থাকে তবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তবে খুব কম সংখ্যক মা স্নায়ুজনিত পার্কিনসন্স ডিজিজ (Parkinson’s Disease) এ আক্রান্ত হন।
  • মানসিক চাপঃ মানসিক চাপ এর জন্য মা এর কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। মানসিক চাপ বা অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা থেকে গর্ভবতী মা এর কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। 

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য এর লক্ষনঃ
গর্ভাশয় মা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে হলে মা এর বুঝতে হবে তার কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে। নিজের শরীর এর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।। নিচের লক্ষনগুলো হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে বুঝতে হবে-

  • মলত্যাগ/পায়খানা না হওয়া 
  • শক্ত পায়খানা হওয়া
  • অল্প করে পায়খানা হওয়া বা বার বার পায়খানার চাপ হওয়া কিন্তু পায়খানা না হওয়া
  • পেট ফুলে যাওয়া বা পেটে অস্বস্তি অনুভব হওয়া
  • পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে।
  • তলপেটে ব্যাথা বা ফাঁপা বোধ
  • পায়খানা করতে অধিক চাপের দরকার হওয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য এর কারনে নিচের পিঠে ব্যথা হতে পারে
  • খাবার অরুচি
  • গ্যাস এর উদ্রেক হতে পারে

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে করনীয়ঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে মা এর কিছু নিয়ম মেনে চলা।উচিত। একজন মা এর গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য খুব স্বাভাবিক। অন্যান্য সাধারণ লক্ষণের সাথে সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যতাকেও গর্ভধারণ এর লক্ষণ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে মা এর যা করা উচিত তা আলোচনা করা হলঃ

  • ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহনঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে মা এর উচিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন করা। বাদামি পাউরুটি, মটর, ডাল ও শস্য খাওয়া উচিত। 
  • অধিক তরল পান করাঃ যেকোনো মানুষের জন্য তরল পান করা অত্যাধিক জরুরি। গর্ভাবস্থায় মা এর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করনে পানির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে গর্ভবতী মা একসাথে পানি পান না করর ধীরে ধীরে অল্প পরিমানে বার বার পানি পান করবেন। আশঁ জাতীয় খাদ্য খেলে পানির পরিমান ও বাড়ানো উচিত।
  • অল্প পরিমানে বার বার খাওয়াঃ একেবারে না খেয়ে বার বার খাওয়া উচিত অল্প পরিমানে। এতে মায়ের পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ বা ধকল কম পড়ে।
  • নিয়মিত ব্যায়ামঃ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে মায়ের উচিত হালকা পরিমাণে ব্যায়াম করা। খাবার হজম হতে মা এর শরীর মুভমেন্ট এর বিকল্প নেই। ব্যায়াম করলে আপনার অন্ত্রের পেশীগুলি সঠিকভাবে সংকুচিত হয় তখন তা মলকে দ্রুতকরন ও সহজবোধ্য হতে সহায়তা করে।
  • পেলভিক এক্সারসাইজ করাঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণ করতে গর্ভবতী মা পেলভিক এক্সারসাইজ বা কিগাল এক্সারসাইজ করতে পারেন।। 
  • ল্যাক্সাটিভ জাতীয় / জোলাপ ওষুধ গ্রহনঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ের জন্য ল্যাক্সাটিভ(laxative) জাতীয় / জোলাপ।ওষুধ নিরাপদ কারন এগুলো পরিপাকতন্ত্রে থেকে যায় কিন্তু রক্তে প্রবেশ করে না। গর্ভাবস্থায় জোলাপ নিরাপদ মা ও শিশুর জন্য।[ americanpregnacy.org]। এক ধরনের ল্যাক্সাটিভ এর মাঝে মিল্ক অফ ম্যাগনেসিয়া ( Milk of Magnesia) গ্রহন করা নিরাপদ।
  • পিঠের নিচে মালিশ করা যেতে পারে

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে কিছু ঘরোয়া খাবার এর তালিকাঃ

  1. গরম পানিঃ গরম পানি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। নিয়মিত সকালে খালি পেটে ১ গ্লাস গরম পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ নিরাময় হতে পারে। 
  2. লেবুঃ খাবারের তালিকায় লেবু যোগ করুন। লেবুর রস শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিয়ে শরীরে সতেজতা এনে দেয়।
  3. ঢেড়সঃ ঢেড়স কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভাল কাজ করে।
  4. ইসুপগুলের ভূষিঃ ইসুপগুলের ভূষি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
  5. বাদাম এবং বীজঃ  আমন্ড/কাঠবাদাম,চিনা–বাদাম,সূর্যমুখীর বীজ এবং আখরোট প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে রাখতে চেষ্টা করুন।
  6. পেয়ারা, আপেল,নাশপাতি,বেরী,কমলা এবং ট্যাঞ্জারিন(কমলা লেবুর ন্যায় ছোট এক ধরনের ফল বিশেষ) খাদ্য তালিকায় যোগ করুন।
  7. পালং শাক কোষ্ঠকাঠিন্যে নিরাময়ে ভাল কাজ করে। 
  8. কিউই, পিয়ার্স ফল কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করে 
  9. তিলবীজ তিল বীজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষেত্রে অনেক উপকার করে থাকে। তিল বীজ গুড়া করে আটা বা ময়দার সাথে মিশিয়ে রুটি তৈরি করে খেতে পারেন। এতে করে দেহে ফাইবারের অভাব পূরণ হবে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে।
  10. বেলের সরবত বেলের সরবতও অনেক উপকারী। বেলের সরবত পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে।।

গর্ভবতী মা এর শারীরিক জটিলতা সম্পর্কে মা পূর্বে অবগত থাকলে মা জরুরী পদক্ষেপ নিতে পারেন। মা কে পথ দেখানোর জন্য Pawkythings.com কাজ করে যাচ্ছে।।আপনাদের ভাল লাগলে অন্য মা এর সাথে শেয়ার করবেন।

Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুনঃ
গর্ভাবতী মা এর অধিক গরম লাগার কারন ও করনীয়
গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মা এর রোজায় করনীয়
গর্ভধারণে বিলম্বিত? কোন ভুল করছেন না তো?
গর্ভকালীন ডায়বেটিস এ মা এর করণীয়
গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে করনীয়

সম্পর্কিতপোস্ট

সম্পর্কিত পোস্ট

মন্তব্য করুন বা প্রশ্ন করুন ?

অনুসরণ করুন

error: Content is protected !!