শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক কিভাবে আনন্দঘন করতে পারেন

শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক কিভাবে আনন্দঘন করতে পারেন

শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক কিভাবে আনন্দঘন করতে পারেন ,সে ব্যাপারে পিতামাতাকে সচেতন হতে হবে। পিতা-মাতা ও শিশুর সম্পর্ক একটি গাছের মত। একটি গাছের যত্ন ও পরিচর্যা  যদি সঠিকভাবে করা হয়, গাছটি অনেক সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠবে। ঠিক তেমনি শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক যত্ন ও পরিচর্যার উপর নির্ভর করে।

প্রথমত শিশুর দিকে পরিপূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে।  দ্বিতীয়ত শিশুদের বিকাশের সুযোগ দিন। তৃতীয়ত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে  লক্ষ্য রাখুন। অন্যভাবে বলা যায় এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারলে শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে।

শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক কিভাবে আনন্দঘন করতে পারেন:

সন্তানকে সময় দিনঃ 


শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক  আনন্দঘন করতে প্রথমত শিশুর দিকে পরিপূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে । শিশুকে সময় দিন। তার সঙ্গে কথা বলুন। শিশুর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। ভালো কাজে শিশুকে সব সময় উৎসাহিত করুন এবং প্রশংসা করুন।  এতে বুদ্ধির বিকাশ ঘটবে। বাসায় বসে মোবাইল,ট্যাব বা ভার্চুয়াল জগতে ডুবে না থেকে সন্তানকে সময় দিন।। ওর সংগে সৃজনশীল খেলা খেলুন। খেলাধুলার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি  সৃজনশীল  কাজে আগ্রহী করতে হবে। পারিবারিকভাবে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।  আপনার সময় নিশ্চয়ই আপনার শিশুর কাছে অনেক মূল্যবান।।

নিজস্ব ধর্মের প্রার্থনাঃ

শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক আনন্দঘন করতে সন্তানকে সংগে নিয়ে নিজের ধর্মের প্রার্থনা করুন। নামায পড়ুন সন্তানকে পাশে নিয়ে।। যিকির,দুয়া বা সুরা শিখান।। অন্য ধর্মাবলম্বীরা তাদের নিয়মাবলি শিখান। সে ও শিখবে।। আপনার ও সময়টা ভাল কাটবে। শিশুর বিকাশে আপনার এই সময়টুকু ওর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে

ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করুনঃ 


শিশুর বিকাশের জন্য আপনি আপনার সন্তানকে নিয়ে ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করুন। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ । প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে শিশুদেরও ব্যায়ামের প্রয়োজন। এতে করে পিতা-মাতা ও সন্তানের একটি ভালো সময় কাটবে।

শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক কিভাবে আনন্দঘন করতে পারেন
শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক কিভাবে আনন্দঘন করতে পারেন

বাগান করুনঃ 

পিতা-মাতা সন্তানকে সংগে নিয়ে ছাদে বা বারান্দায় বাগান করতে পারেন।। গাছে পানি দিন বা একটু গাছ নিয়ে পরিচর্যা করুন। শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশকে  বিকশিত করতে এটি একটি ভাল উদ্যোগফলে শিশুর সময় ও ভাল কাটবে ,আপনারও ভাল কাটবে। অনেক সময় বাসায় বসে অফিস করা হয়। বাসায় বসে অফিস করছেন ভাল কথা তবে অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত না থেকে একটু কোয়ালিটি টাইম দিন পরিবারকে,আপনার শিশুকে। এটি আপনার নিজের জন্যই উত্তম।।

ঘরের কাজে সাহায্য নিনঃ 


শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক আনন্দঘন করতে আপনার শিশুকে ব্যস্ত রাখা শিখুন। আপনি আপনার সেল্ফ,বা জামা কাপড় গোছানোর সময়ে শিশুর হেল্প চান। এটা ওটা এগিয়ে দিতে বলেন।। বাচ্চাকে আমাদের ছোট ছোট দায়িত্ব দিতে হবে। এতে করে আপনার শিশু বেজায় খুশি হবে।সর্বোপরি আপনাদের একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

মা-বাবা মিলেমিশে কাজ করুনঃ  

অধিকাংশ অভিভাবকের শিশুর সঠিক যত্ম ও প্রতিপালন সম্পর্কে এখনো  বিস্তর ধারনা নেই। পরিবেশ বাচ্চাদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক  আনন্দঘন করতে  মা বাবা মিলেমিশে কাজ করুন।। মা বাবা একত্রে কাজ করলে সন্তান অনেক খুশি হয়।। করেই দেখুন তারপর নিজেই অনুধাবন করতে পারবেন।। এক্ষেত্রে আমাদের পুরুষ সঙিদের সাহায্য অবশ্যই কাম্য।।

 ছুটির দিনগুলোতে ঝগড়াঝাটি করে সময় নস্ট করবেন নাঃ


শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক  আনন্দঘন করতে ছুটির দিনগুলোতে ঝগড়াঝাটি করে সময় নস্ট করবেন না। প্রথমত কর্মব্যস্ততার পর আসে এই ছুটির দিন ।  তাই এই সুন্দর সময়ে অযথা দমবন্দি পরিস্থিতির সৃষ্টি করবেন না । শিশুর মস্তিস্ক দ্রুত বিকশিত হয়। শিশুর ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতাগুলো মস্তিস্কের বৃদ্ধির ওপর বাজে প্রভাব ফেলে ।  প্রতি চারটি শিশুর মধ্যে তিনটি শিশু মানসিক নির্যাতনের এবং প্রতি তিনটি শিশুর মধ্যে দুটি শারীরিক শাস্তি ভোগ করেছে। আপনার শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য আপনারই দেখতে হবে।

মুভি টাইম করুনঃ 

শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে যেকোনো কার্টুন, রাইমস বা মুভি বাচ্চাকে সাথে নিয়ে দেখুন,
বিশ্বাস করুন ম্যাজিকের মত কাজ করবে ব্যাপারটা। শিশুর বুদ্ধির বিকাশে এসব সৃজনশীল কাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

নিজেরা কিছুসময়ের জন্য ঘরের মাঝেই খেলা করুনঃ 

শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক সময় আনন্দঘন করতে বাড়িতে সময় কাটান সন্তানের সঙ্গে মা -বাবা আপনারা দুজন সন্তান নিয়ে খেলা করতে পারেন। যেমন- হাইড এন্ড সিক( লুকোচুরি), দৌড়াদৌড়ি বা বল নিয়ে কোনো খেলা। বাচ্চাদের যত খেলনা আছে সবগুলো নিয়ে শুরু হয়ে যাক দৌড়। ছোট কিংবা বড় খেলনা যোগ দিক এই খেলার আয়োজনে।  অন্যভাবে বলা যায় আসলে যতটা সময় একসাথে থাকতে হবে ততটাই সময় এবং সম্পর্ক মধুর হয়ে উঠবে।

রান্নায় অংশগ্রহণ : 

শিশুদের মানসিক বিকাশে আপনার বাচ্চাকে রান্নার সঙ্গী করুন। অধিকাংশ বাচ্চাই রান্নাঘরে কাজ করতে ভালোবাসে।  রান্নাঘরে আপনাকে সাহায্য করতে সে সব সময়ই খুশি হবে।  নুডুলস কিংবা ফ্রেন্স ফ্রাই , সহজ কোন রান্না করার সময় হয় তো একটু গল্প করলেন  হয়তোবা রেসিপি বলে দিলেন বা ওর মতামত নিলেন।  অসম্ভব খুশি হবে আপনার শিশু । শিশু বিকাশে মা বাবার এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়াসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

নিয়মতান্ত্রিক জীবন- 


শিশু ও পিতা-মাতার সম্পর্ক আনন্দঘন করতে মাঝে মাঝে একটু নিয়মতান্ত্রিক জীবনের বাইরে কাটানো যায় । আপনার ও শিশুর খাওয়ার সময়, ঘুমানোর সময়,গোসলের সময় সবই নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলছে , চলুক। হঠাৎ একটু সারপ্রাইজ দিতে গোসলের সময় টা একটু আনন্দদায়ক করতে আপনিও গোসল করতে নেমে পড়লেন । ভিজে গেলেন ,ভিজিয়ে দিলেন।

সন্তানের ভাল ভাবুন,
নিজেই আবিস্কার করতে শিখে যাবেন কি করা উচিত।
ভাল থাকুন।। ভাল রাখুন।।
বিপদের সময়গুলো সাহসের সংগে অতিক্রম করুন।
আমাদের আর্টিকেল টি ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করুন।। 

আরও পড়ুন:

টিনেজ মেয়েদের খাদ্যপুষ্টি ও গাইডলাইন
করোনার ঝুঁকি এড়াতে মা,গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের জন্য করনীয়
মোবাইল স্ক্রিনিং বা গেজেট আসক্তিতে বাচ্চাদের কিভাবে সামলাবেন?
আবহাওয়া অনুযায়ী শিশুর পোশাক
শিশুরা কেন সব কিছু মুখে দেয় ? সতর্কতা ও করনীয়

সম্পর্কিতপোস্ট

সম্পর্কিত পোস্ট

মন্তব্য করুন বা প্রশ্ন করুন ?

অনুসরণ করুন

error: Content is protected !!